ড.বেনজীর আহমেদ (আইজিপি) সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেছেন, পুলিশ বিভাগের কেউ অন্যায় বা ভুল করলে রিপোর্ট করবেন। কিন্তু মিথ্যা কথা লিখবেন না। বানিয়ে কিছু লিখবেন না।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।বেনজীর আহমেদ বলেন, সাংবাদিকতায় এখন অনেক চৌকস মেধাবীরা আসছেন। তাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। পুলিশ বিভাগেও স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আমাদের ভালো কাজ মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণ যেন জানতে পারে সেদিকে নজর দিতে হবে। মিডিয়া সোচ্ছার হলে সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ গুজব ছড়াতে পারবে না।পুলিশ সদর দপ্তরের শাপলা কনফারেন্স সেন্টারে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে ক্র্যাব সভাপতি মিজান মালিক ও সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আরিফের নেতৃত্বে কমিটির অন্যান্য নেতা ও সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে বিশেষ করে অপরাধ ক্র্যাবের সঙ্গে পুলিশের প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক রয়েছে। মেইন স্ট্রিম মিডিয়ায় জবাবদিহিতা রয়েছে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো জবাবদিহিতা নেই। এই মিডিয়া থেকে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এটা মোকাবিলা করতে যৌথভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
আইজিপি বলেন, এক সময় ঢাকায় ১৬৫টি ছিনতাই স্পট ছিল। বিমানবন্দর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইনের দুই পাশে ছিল মাদকের হাট। এখন রাজধানীসহ সারা দেশে মাদক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অনেকটাই কমে এসেছে। আগে প্রতিদিন গুলি ছিনতাইয়ের খবর পাওয়া যেত।এখন ডিএমপি কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে। পুলিশ এক সময় টেলিভিশন চ্যানেল দেখলে পালাত। এখন একজন রাস্তায় দায়িত্ব পালন করা কনস্টেবলও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আমরা এই আস্থার জায়গাটা তৈরি করতে পেরেছি।
বেনজীর আহমেদ বলেন, গুলশান-বারিধারা এলাকায় কোনো চুরি ছিনতাই হয় না। কারণ ওই এলাকাগুলো সিসি ক্যামেরার আওতায়। গুলশান, বারিধারা, বনানী এলাকায় সাড়ে ১১শ’ সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে স্থানীয়দের সহায়তায়।বিদেশের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, লন্ডনে ১৩ মিলিয়ন সিসি ক্যামেরা রয়েছে। শুধুমাত্র লন্ডন সিটিতে রয়েছে ১ মিলিয়ন সিসি ক্যামেরা। প্রতিটা লোকের গতিবিধি অনুসরণ করা হয়।
পুলিশের আচরণ প্রসঙ্গে বেনজীর আহমেদ বলেন, পুলিশে কেন দুর্নীতি থাকবে, কেন ভুল বোঝাবুঝি হবে? পুলিশের আচরণ পরিবর্তনে কাজ চলছে। পুলিশ সদস্যদের আরও স্মার্ট হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। আইজিপি বলেন, করোনায় ফ্রন্ট লাইনের যোদ্ধা হিসেবে পুলিশ-সাংবাদিক একত্রে কাজ করেছে। ২৫০ শয্যা পুলিশ হাসপাতালকে ১৫শ’ শয্যায় উন্নিত করা হয়েছে। শুধু পুলিশ সদস্য নয়; সাধারণ মানুষও সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ক্রাইম রিপোর্টাররাও চাইলে সেখানে টিকা নিতে পারবেন বলে জানান আইজিপি।
তিনি বলেন, বর্তমানে পুলিশ বাহিনীতে করোনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দেশের উন্নয়নে সাংবাদিক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী উভয়কে একযোগ কাজ করার আহ্বান জানিয়ে আইজিপি বলেন, নতুন প্রজন্মের জন্য একটি ভালো দেশ রেখে যেতে চাই।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আরিফ। এছাড়া ক্র্যাবের নানা পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে বক্তব্য দেন ক্র্যাব সভাপতি মিজান মালিক।এ সময় পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) ড. মইনুর রহমান চৌধুরী, অতিরিক্ত আইজিপি রুহুল আমিন, মাজহারুল ইসলাম (এইআরএম), ডিআইজি (অপারেশন্স) খুরশিদ হোসেন, তৌফিক মাহবুব চৌধুরী (লজেস্টিক অ্যান্ড মিডিয়া), অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন) মাসুদুর রহমান, এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা এবং পুলিশ সদর দপ্তরের উপপ্রধান তথ্য অফিসার একেএম কামরুল আহছান প্রমুখ।